হজ্জ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও পালন না করার কুফল
সামর্থ্যবানদের জন্য হজ্জ আদায় করা ফরজ। আর ধনী গরিব সকলের জন্যই হজ্জ আদায়ে রয়েছে বিশেষ ফজিলতও। আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক সম্পদশালী, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তির জন্য জীবনে একবার হজ্জ আদায় করা ফরজ। যা প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগ হতে আজ পর্যন্ত ফরজ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এ হজ্জকে অস্বীকার করা বা হজ্জের কার্যাবলীর সমালোচনা করা কুফরি। হজ্জ হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির সম্বন্বয়ে এক যৌগিক ইবাদত।
সামর্থবানদের মধ্যে যাদের ওপর হজ্জ আদায় করা ফরজ হয়েছে অথচ হজ্জ আদায় থেকে তারা নিজেদেরকে বিরত রেখেছেন, তাদের সম্পর্কে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন।
কারণ ফজর হজ্জ আদায় না করে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিকে ইয়াহুদি ও নাসারাদের মৃত্যুর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। যা মুমিন মুসলমানের জন্য অনেক বড় দুঃসংবাদ। তাই হজ্জ আদায়ের কঠোর তাগিদ সম্পর্কিত প্রিয় নবীর দুটি হাদিস তুলে ধরা হলো,
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এই পরিমাণ পাথেয় এবং বাহনের মালিক হয়েছে; যা তাকে আল্লাহ তাআলার ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিবে, অথচ সে হজ্জ করেনি। ওই ব্যক্তি ইয়াহুদি কিংবা নাসারা হয়ে মৃত্যুবরণ করুক, ইহাতে (আল্লাহর) কিছু যায় আসে না। আর ইহা ঐ কারণে যে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মানুষের প্রতি আল্লাহর উদ্দেশ্যে বাইতুল্লাহর হজ্জ ফরজ; যে ব্যক্তি সেই (বাইতুল্লাহ) পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ লাভ করেছে। (তিরিমজি)
হজ্জ ফরজ হওয়া ব্যক্তির হজ্জ আদায়ে কোনো বাধা না থাকা সত্ত্বেও যারা হজ্জ আদায় থেকে বিরত রয়েছেন; তাদের পরিণাম কত ভয়াবহ যে, এ অবস্থায় মৃত্যু হলো ইয়াহুদি-নাসারাদের মৃত্যুর সমান। (নাউজুবিল্লাহ) প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য হাদিসে বর্ণনা করেন,
হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলু্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তিকে তীব্র অভাব, অত্যাচারী শাসক কিংবা গুরুত্বর অসুস্থতা হজ্জ আদায় করতে বাধা প্রদান করে নাই এমতাবস্থায় ওই ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে; অথচ সে হজ্জ পালন করেনি। এবার চাই সে ইয়াহুদি হয়ে মারা যাক অথবা নাসারা হয়ে মারা যাক। (দারেমি)
তাই হজ্জ ফরজ হওয়ার পর যদি পরবর্তীতে কোনো ব্যক্তি সম্পদহারা হয়ে যায়; তবে তার ওপর ফরজ হজ্জ আদায়ের হুকুম রহিত হবে না। আবার ফরজ হজ্জ আদায় না করার উল্লেখিত পরিণতি তাকে ভোগ করতে হবে।
আর তাই হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী অনতিবিলম্বে হজ্জ আদায় করা মুসলিম উম্মাহ একান্ত জরুরি কাজ। আর হজ্জে মাবরুর তথা কবুল হজ্জের একমাত্র পুরস্কার সুনিশ্চিত জান্নাত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন