ব্যভিচারের শাস্তি কি?

ব্যভিচার (Fornication) হল দুজন অবিবাহিত(নারী-পুরুষ) বা অবিবাহযোগ্য (রক্তসম্পর্ক বা সমলিঙ্গ , রক্তসম্পর্কীয় যৌনতা অজাচারের অন্তর্ভূক্ত) ব্যক্তির মধ্যে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত সংঘটিত যৌনকর্ম।
Fornication is generally consensual sexual intercourse between two people not married to each other.(Wikipedia)

ইসলামে ব্যভিচার একটি জঘন্য অপরাধ। হত্যার পরই এটি সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। আল্লহ ইহকালে এবং পরকালে উভয় সময়ই এর শাস্তির কথা বলেছেন।তবে তাওবাকারীর কথা ভিন্ন।
সূরা ফুরকান (৬৭-৭০) ” এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যা হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত
তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻳَﺨْﻠُﺪْ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।
ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ
ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺘَﺎﺑًﺎ
আল্লহ ইহকালের শাস্তির কথা বলছেন এবং আবার বলছেন পরকালে দ্বিগুণ শাস্তির কথা বলছেন।আবার যে তাওবা করছে তাকে ক্ষমা করার কথাও বলছেন।নিশ্চয় তিিন অত্যন্ত দয়ালু এবং ক্ষমাশীল।

ব্যভিচারের শাস্তি কখন হয় এ বিষয় নিয়ে আগে বলিঃ
ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺮَﺑُﻮﺍْ ﺍﻟﺰِّﻧَﻰ ﺇِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ
ﻓَﺎﺣِﺸَﺔً ﻭَﺳَﺎﺀ ﺳَﺒِﻴﻼً
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।(সূরা নূর ২)

★ ব্যভিচার করলে যদি তা গোপন থাকে তাহলে এক্ষেত্রে তার জন্য তওবা করায় যথেস্ট।

(১)
ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ
ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা ফুরকান ৬৯)

ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺗَﺎﺑُﻮﺍ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﺫَﻟِﻚَ
ﻭَﺃَﺻْﻠَﺤُﻮﺍ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻏَﻔُﻮﺭٌ
ﺭَّﺣِﻴﻢٌ
কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।(সূরা নূর ৫)

“”কেউ যদি ব্যভিচার করে এবং আল্লহ তালার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে মহান আল্লহ তার গোনাহ মাফ করে দিবেন।আল্লহ শিরক যদি ক্ষমা করেন,তাহলে ব্যভিচার কেন ক্ষমা করবেন না?””

মূল বক্তব্যে হলো অপ্রকাশিত এবং অপ্রমাণিত ব্যভিচারের জন্য কোনো শাস্তি নেই। যদি ব্যভিচার গোপন থাকে এবং ব্যভিচারী তাওবা করে তাহলে হয়তো সে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।কিন্তু যদি প্রমাণিত হয় তবে তাকে শাস্তি পেতে হবে।সমাজে একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে-” চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা”।এখানেও বিষয়টা অনেকটা ঐরকমই।অপ্রকাশিত এবং অপ্রমাণিত ব্যভিচারের কোনো শাস্তি নেই।

নিচের হাদিসটি দেখুনঃ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন- তোমরা ব্যভিচার থেকে দূরে থাকো যা আল্লহ তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।এরপরও যে শয়তানের পড়ে তা করে ফেলে সে যেন তা লুকিয়ে রাখে। যখন আল্লহ তা গোপনই রেখেছেন।তবে সে যেন এ জন্য আল্লহ তালার নিকট তাওবা করে নেয়। কারণ যে ব্যক্তি তা আমাদের নিকট প্রকাশ করে তার উপর আমরা অবশ্যই আল্লহ তালার বিধান প্রয়োগ করবো। (হাকিম ৪/২৭২)

দেখেছেন নবী সাঃ কি বললেন? যদি কেউ ব্যভিচার করে যে যেন তা গোপন রাখে।আর আল্লহর কাছে যেন তাওবা করে; এটাই যথেষ্ট।কিন্তু যদি তা প্রকাশিত হয় তবে তার উপর আল্লহর বিধান প্রয়োগ করা হবে। সুতরাং শাস্তি কেবল প্রকাশিত ব্যভিচারের জন্য।আর নবী সাঃ ব্যভিচারকে গোপন রাখাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং শাস্তি দেওয়াটাই অপছন্দ করেছেন।

যেমন হযরত মায়িয বিন মালিক রাঃ যখন রাসূল সাঃ এর নিকট বার বার ব্যভিচারের স্বীকারোক্তি করছিলেন তখন রাসূল তার প্রতি এতটুকুও ভ্রুক্ষেপ করেন নি।চার বারের পর তিনি তাকে এও বলেনঃ হয়তো বা তুমি তাকে চুমু দিয়েছো, ধরেছো কিংবা তার প্রতি দৃষ্টিপাত করেছো।কারণ এতে করে তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে আল্লহ তা’আলার নিকট খাঁটি তওবা করার সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যভিচারের জন্য তওবা করায় যথেষ্ট। তবে যদি ব্যভিচার করার কথা প্রকাশিত হয়ে পড়ে তাহলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।এর অনেকগুলো কারণ রয়েছেঃ

আমরা জানি,নামায পড়া অতি গুরুত্বপূর্ণ ফরয।তবে কেউ যদি নামায না পড়ে তাহলে এতে সে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে,কিন্তু এতে অন্যের কিংবা সমাজের কোনো ক্ষতি হয় না।কিন্তু ব্যভিচার এমন একটি পাপ যা একা হয় না; অন্যে আর একজন পুরুষ কিংবা নারীর প্রয়োজন হয়।সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হয়। ডিভোর্স বৃদ্ধি পায়, সমাজে মর্যাদার হ্রাস ঘটে।বিভিন্ন যৌন রোগ সৃষ্টি হয়।যেমন- সিফিলিস, গনোরিয়া,এইডস ইত্যাদি।এবং ব্যভিচারের প্রসারের ফলে এগুলো মহামারী আকার ধারণ করে।তাই ব্যভিচার বন্ধের জন্য দৃষান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন।কারণ যদি কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে এটা ব্যপকভাবে প্রসার পেত।তাই ব্যভিচারীর শাস্তির প্রয়োজন।

আমরা জানলাম ব্যভিচারের শাস্তি কখন হয় এবং কেন শাস্তি হওয়া উচিত।এবার ব্যখিচারের শাস্তি কি তা জানতে হবে।

১)বিবাহিতদের ব্যভিচারের শাস্তি প্রস্তরাঘাতে মৃত্যু।
২)অবিবাহিতদের ব্যভিচারের শাস্তি একশ বেত্রাঘাত।

তার আগে ব্যভিচারের শাস্তির পূর্বশর্ত আগে জেনে নিঃ

আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী কোন শাস্তি প্রয়োগ করা সবচেয়ে কঠিন? আমি কোনো সন্দেহ ছাড়াই বলব ব্যভিচারীর শাস্তি।
ব্যভিচার প্রমাণ করতে চার জন সাক্ষী আনতে হবে।

ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺮْﻣُﻮﻥَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ
ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳَﺄْﺗُﻮﺍ ﺑِﺄَﺭْﺑَﻌَﺔِ ﺷُﻬَﺪَﺍﺀ
ﻓَﺎﺟْﻠِﺪُﻭﻫُﻢْ ﺛَﻤَﺎﻧِﻴﻦَ ﺟَﻠْﺪَﺓً ﻭَﻟَﺎ
ﺗَﻘْﺒَﻠُﻮﺍ ﻟَﻬُﻢْ ﺷَﻬَﺎﺩَﺓً ﺃَﺑَﺪًﺍ
ﻭَﺃُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻔَﺎﺳِﻘُﻮﻥَ
যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না,তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত
করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই না’ফারমান।(সূরা নূর ৪)

ব্যভিচার প্রমাণ করতে হলে চার জন সাক্ষী লাগবে।যদি না আনতে পারে তাহলে তাকে ৮০ টা বেত্রাঘাত করতে হবে।

নিচের হাদিসটা দেখুনঃ
“(৪৩৮৮-বুখারী) মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত।হিলাল ইবনু
উমাইয়া রাসুলুল্লাহ এর কাছে শারিক ইবনু সাহমার সাথে তার স্ত্রীর ব্যভিচারের অভিযোগ করল।নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, সাক্ষী (হাযির কর) নতুবা শাস্তি তোমার
পিঠে পরবে। হিলাল বলল,ইয়া রাসুলুল্লাহ! যখন
আমাদের মধ্যে কেউ তার স্ত্রীর উপর অন্য
কাউকে দেখে তখন সে কি সাক্ষী তালাশ করতে যাবে? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে লাগলেন,সাক্ষী নতুবা শাস্তি
তোমার পিঠে। হিলাল বললেন, শপথ সে সত্তার,
যিনি আপনাকে সত্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিসেবে পাঠিয়েছেন,নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী। অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা এমন বিধান
অবতীর্ণ করবেন, যা আমার পিঠকে শাস্তি থেকে মুক্ত করে দিবেন। তারপর জিবরাঈল আলাইহি ওয়া সাল্লাম এলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নাযিল করা হল-
“যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে”থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন,“যদি সে সত্যবাদী হয়ে থাকে” পর্যন্ত। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরলেন এবং তার স্ত্রীকে [১] ডেকে আনার জন্য লোক পাঠালেন।।হিলাল
এসে সাক্ষী দিলেন [২] আর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছিলেন, আল্লাহ।তা’আলা তো জানেন যে তোমাদের দুজনের মধ্যে অবশ্যই একজন মিথ্যাবাদী।
তবে কি তোমাদের মধ্যে কেউ তওবা করবে?
স্ত্রীলোকটি দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিল। সে যখন পঞ্চম বারের কাছে পৌঁছল, তখন লোকেরা তাকে বাঁধা দিল এবং বলল , নিশ্চয়ই এটি তোমার উপর
অবশ্যম্ভাবী। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন,
একথা শুনে সে দ্বিধাগ্রস্ত হল এবং ইতস্তত করতে লাগল।এমন কি আমরা মনে করতে লাগলাম যে, সে নিশ্চয়ই প্রত্যাবর্তন করবে।
পরে সে বলে উঠল,আমি চিরকালের জন্য আমার বংশকে কলুষিত করবনা।সে তার সাক্ষ্য পূর্ণ করল।[৩] নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর প্রতি দৃষ্টি রেখ।যদি সে কালো, ডাগর চক্ষু,বড় পাছা ও মোটা নলা বিশিষ্ট
সন্তান প্রসব করে তবে ও সন্তান শারিক ইবনু
সাহমার। পরে সে অনুরূপ সন্তান জন্ম দিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, যদি এ।বিষয়ে আল্লাহর কিতাব
কার্যকর না হত,তাহলে অবশ্যই আমার ও তার
মধ্যে কি ব্যপার যে ঘটত। ১/খাওলা। ২/ আনিত
অভিযোগেরসত্যতা সম্পর্কে শপথ
করলেন। ৩/ পঞ্চম বার শপথ করল।

মহানবী সাঃ সাক্ষী ছাড়া কোনরকম সিদ্ধান্ত দিলেন না।আর সাহাবীর প্রশ্নও অনেক যুক্তিযুক্ত যে, আমাদের মধ্যে কেউ তার স্ত্রীর উপর অন্য
কাউকে দেখে তখন সে কি সাক্ষী তালাশ করতে যাবে? তবুও কিন্তু নবী সাঃ বললেন, সাক্ষী নতুবা শাস্তি
তোমার পিঠে।

এবার যুক্তিতে আসি…
মানুষ যখন ব্যভিচার করে সাধারণতই তা গোপনে করে।এখন এ অবস্থায় দুইজন ব্যভিচার করছে এবং তাদের চারজন ব্যভিচার করতে দেখবে এটা প্রায় অসম্ভব। তাদের দুই একজন দেখতে পারে এটা স্বাভাবিক কিন্তু পরপর চারজন দেখবে এটা প্রায় অসম্ভব। আর যদি প্রমাণ করতে না পারে তাহলে তো ৮০ বেত্রাঘাতেরও ব্যাপার আছে।হযরত উমর (রাঃ)ও ব্যভিচার করতে দেখেছিলেন এবং তিনি তখন খলিফা ছিলেন; ইচ্ছা করলে শাস্তি দিতে পারতেন কিন্তু সাক্ষীর অভাবে তা সম্ভব হয় নি। তাই বলেছিলাম ব্যভিচারের শাস্তি দেওয়া অসম্ভব একটা ব্যাপার।

তাহলে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, নবী (সাঃ) তাহলে কিভাবে ব্যভিচারের শাস্তি দিয়েছেন? আচ্ছা, আপনি ব্যভিচারের শাস্তি দেওয়া নিয়ে যতগুলো হাদিস আছে লক্ষ্য করে দেখবেন প্রত্যেকে যারা ব্যভিচার করেছে সকলে নিজে এসে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, তারা ব্যভিচার করেছে।তারপরও নবী (সাঃ) তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।কিন্তু তাদের বারবার স্বীকারোক্তির কারণে শাস্তি দিয়েছেন। মায়িয বিন মালিক রাঃ এর ব্যভিচারের শাস্তি দেওয়া তার স্পষ্ট প্রমাণ।মুসলিম স্কলাররা বলেন, ইসলামের যুগে কোনো ব্যভিচারের শাস্তি সাক্ষীর ভিত্তিতে হয় নি,সব হয়েছে মৌখিক স্বীকারোক্তিতে।

সাহাবীদের যুগে এবং তার পরবর্তী যুগের মানুষেরা অধিক তাকওয়াবান ছিলেন।যেহেতু পৃথিবীর শাস্তি তার পাপের কাফফারা হয়ে যায় তাই তারা পাপের কথা স্বীকার করে নিজেদের পবিত্র করেছে।কিন্তু বর্তমানে এমনকি কোনো মানুষ পাওয়া যাবে যে অবশ্যম্ভাবী এমন শাস্তির কথা জেনেও তার পাপের স্বীকারোক্তি দিবে?

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, ব্যভিচারের শাস্তি দেওয়া খুবই কঠিন কাজ।

এবার আমরা ব্যভিচারের শাস্তি কি তা জানবঃ

১) নারী পুরুষ ব্যভিচার করলে তার শাস্তি একশ বেত্রাঘাত (সূরা নূর২) এবং হাদিস অনুসারে অবিবাহিতদের শাস্তি একশ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের নির্বাসন।(বুখারী, মুসলিম)

এ বিষয় নিয়ে কারো মতভেদ নেই বলে আমার মনে হয়। তবে বিবাহিতদের ব্যভিচারের শাস্তি নিয়ে কিছুটা মতভেদ আছে।তারা কুরআন এবং হাদিস থেকে কিছু ব্যাখ্যা দেয়,তাদের দাবি যৌক্তিক।তবে আশা করি নিচের আলোচনায় এ সম্পর্কে আপনার অনেকটা পরিষ্কার ধারণা দিতে পারব।

হাদিস অনুসারে বিবাহিতদের ব্যভিচারের শাস্তি রজম অর্থ্যাৎ প্রস্তরাঘাতে মৃত্যু।সহীহ বুখারী,মুসলিম এবং অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে এ হাদিসগুলো পাবেন।তাই এটা কোনো দ্বিধা ছাড়ায় মেনে নিচ্ছি।রজমের বিধান কার্যকর নেই যারা দাবি করেছে তাদের যুক্তি খন্ডন করার চেষ্টা করব।আমি কারো সমালোচনা করছি না।সবাইকে সম্মান করি।কেবল আমার মতামত দিব।পর্যায়ক্রমে যুক্তিখন্ডন করার চেষ্টা করব।ইনশাআল্লহ।

(১ নং প্রশ্নঃ) কুরআনে নূরের ২ নং আয়াতে বেত্রাঘাতেরর কথা আছে।আর সেখানে অবিবাহিত ব্যভিচারী বলাও নেই?

ﺍﻟﺰَّﺍﻧِﻴَﺔُ ﻭَﺍﻟﺰَّﺍﻧِﻲ ﻓَﺎﺟْﻠِﺪُﻭﺍ
ﻛُﻞَّ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻣِّﻨْﻬُﻤَﺎ ﻣِﺌَﺔَ ﺟَﻠْﺪَﺓٍ
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺄْﺧُﺬْﻛُﻢ ﺑِﻬِﻤَﺎ ﺭَﺃْﻓَﺔٌ ﻓِﻲ
ﺩِﻳﻦِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢْ ﺗُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ
ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ ﻭَﻟْﻴَﺸْﻬَﺪْ
ﻋَﺬَﺍﺑَﻬُﻤَﺎ ﻃَﺎﺋِﻔَﺔٌ ﻣِّﻦَ
ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ
ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ;তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর
বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়,যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক।মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের
শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।(সূরা নূর ২)

(Sahih International) The [unmarried]
woman or [unmarried] man found guilty of sexual intercourse – lash each one of
them with a hundred lashes, and do not be taken by pity for them in the religion of Allah , if you should believe in Allah and the Last Day. And let a group of the believers witness their punishment.

Sahih Iinternational এখানে অর্থ unmarried করেছে তবে অন্যান্যরা ব্যভিচারীই রেখেছে।এখন আপনি বলবেন যে, এটা কিন্তু পরিষ্কার না যে, এটা বিবাহিতদের জন্য না অবিবাহিতদের জন্য।জ্বি কথাটি সঠিক এখানে শাস্তি কাদের স্পষ্ট তা না।তবে যেহেতু হাদিসে আছে অবিবাহিতদের শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত।এখানে তাহলে আপনাকে অর্থ অবিবাহিতই করতে হবে।এতে কুরআন এবং হাদিসের প্রকৃত সমন্বয় হবে।

আচ্ছা আরেকটা বিষয় এ আয়াতটি সকল ব্যভিচারীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাবে না।কারণ আল্লহ সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতে দাসী ব্যভিচারীর শাস্তি স্বাধীন নারীর অর্ধেক করে দিয়েছেন।তাই উক্ত আয়াত দ্বারা যদি বলেন সকল ব্যভিচারীর শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত তাহলে কি বলবেন দাসীর শাস্তিও ১০০ বেত্রাঘাত? নিশ্চয় না।

(২নং প্রশ্নঃ) সূরা নিসার ২৫ নম্বর আয়াতে বিবাহিত দাসীর শাস্তি স্বাধীন নারীর অর্ধেক বলা হচ্ছে।কিন্তু রজমের অর্ধেক হয় কীভাবে?

আল্লাহপাক বলেছেন-
ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻃَﻮْﻟًﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻜِﺢَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ
ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻓَﻤِﻦْ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢْ ﻣِﻦْ ﻓَﺘَﻴَﺎﺗِﻜُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ
ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺈِﻳﻤَﺎﻧِﻜُﻢْ ﺑَﻌْﻀُﻜُﻢْ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺾٍ ﻓَﺎﻧْﻜِﺤُﻮﻫُﻦَّ ﺑِﺈِﺫْﻥِ
ﺃَﻫْﻠِﻬِﻦَّ ﻭَﺁَﺗُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻣُﺤْﺼَﻨَﺎﺕٍ ﻏَﻴْﺮَ
ﻣُﺴَﺎﻓِﺤَﺎﺕٍ ﻭَﻟَﺎ ﻣُﺘَّﺨِﺬَﺍﺕِ ﺃَﺧْﺪَﺍﻥٍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃُﺣْﺼِﻦَّ ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﺗَﻴْﻦَ
ﺑِﻔَﺎﺣِﺸَﺔٍ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻧِﺼْﻒُ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏِ
ﺫَﻟِﻚَ ﻟِﻤَﻦْ ﺧَﺸِﻲَ ﺍﻟْﻌَﻨَﺖَ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻥْ ﺗَﺼْﺒِﺮُﻭﺍ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜُﻢْ
ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭٌ ﺭَﺣِﻴﻢٌ ‏(25 )

“তোমাদের মধ্যে যারা স্বাধীন ও ঈমানদার নারী বিয়ে করার মত আর্থিক সঙ্গতি রাখে না,তারা নিজেদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার ক্রীতদাসীদের
বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে বেশী জানেন।তোমরা একে অপরের সমান।
সুতরাং তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের মালিকের অনুমতি নিয়ে।তারা ব্যভিচারী অথবা উপপতি গ্রহণকারিণী না হয়ে সতী-সাধ্বী হয়ে থাকলে তাদের মোহরানা ন্যায় সঙ্গতভাবে দেবে। বিয়ের পর তারা যদি ব্যভিচার করে,তবে তাদের শাস্তি স্বাধীন নারীর অর্ধেক । এ ধরনের বিয়ে তাদের জন্যেই,যারা স্ত্রী না থাকার কারণে পাপে লিপ্ত
হতে পারে বলে ভয় করে। কিন্তু ধৈর্য ধরা ও স্বাধীন নারীদের বিয়ে করাই তোমাদের জন্য উত্তম।আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং দয়ালু।” (৪:২৫)

(Sahih International) And whoever among you cannot [find] the means to marry free, believing women, then [he may marry] from those whom your right hands possess of believing slave girls.And Allah is most knowing about your faith. You [believers] are of one another. So marry them with the permission of their people and give them their due compensation according to what is
acceptable. [They should be] chaste,
neither [of] those who commit unlawful intercourse randomly nor those who take [secret] lovers. But once they are
sheltered in marriage, if they should
commit adultery, then for them is half
the punishment for free [unmarried]
women. This [allowance] is for him
among you who fears sin, but to be
patient is better for you. And Allah is
Forgiving and Merciful.

Sahih International এ কিন্তু স্বাধিন নারীর অর্থ অবিবাহিত করা হয়েছে।

(Mohsin Khan) And whoever of you have not the means wherewith to wed free,
believing women, they may wed
believing girls from among those
(captives and slaves) whom your right hands possess, and Allah has full knowledge about your Faith, you are one from another. Wed them with the permission of their own folk (guardians,Auliya’ or masters) and give them their Mahr according to what is reasonable;
they (the above said captive and slave-girls) should be chaste, not adulterous,nor taking boy-friends. And after they have been taken in wedlock, if they commit illegal sexual intercourse, their
punishment is half that for free (unmarried) women. This is for him
among you who is afraid of being
harmed in his religion or in his body;
but it is better for you that you practise self restraint, and Allah is oft forgiving,Most Merciful.

এখানেও free women বলতে অবিবাহিত বোঝানো হয়েছে।

http://corpus.quran.com/translation.jsp?chapter=4&verse=25

আর এখানে স্বাধীন নারী(4:25:44)l muḥ’ṣanāti এর অর্থ the free chaste women (refraining from sexual intercourse that is regarded as contrary to morality or religion; virtuous /virgin) করা হয়েছে।কোথাও এর অর্থ বিবাহিত দেখলাম না।আপনি প্রতি word এর অর্থ বিস্তারিতভাবে এখানে দেখতে পারেন।

http://corpus.quran.com/wordbyword.jsp?chapter=4&verse=25#(4:25:1)

যদি স্বাধীন নারী অবিবাহিতই হয় তাহলে দাসীর শাস্তি হবে ১০০/২=৫০ বেত্রাঘাত।এখানে স্বাধীন নারী মানে বিবাহিত যদি না হয় তাহলে তো রজমের প্রশ্নই আসে না।আর রজমের অর্ধেক করার কথা তো দূরেই থাক।

হাদিস দেখুনঃ
মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-২৫৯৬
আব্দুল্লাহ ইবনে আইয়্যাস ইবনে আবি রবিয়া মাখযুমী (রা) বলেন: উমর ইবনে খাত্তাব (রা)
আমাকে এবং আরও কতিপয় কুরাইশী যুবককে ব্যভিচারের দায়ে প্রহার করতে আদেশ দিলে আমরা ব্যভিচারের শাস্তি হিসাবে বায়তুল মালের
দাসীদিগকে পঞ্চাশ পঞ্চাশ বেত্রাঘাত করতাম।

এবার আমি জোর দিয়েই বলছি এখানে স্বাধীন নারী অর্থ হলো অবিবাহিত নারী।কারণ এ আয়াতের পূর্বের অংশটাই তার প্রমাণঃ

“তোমাদের মধ্যে যারা স্বাধীন ও ঈমানদার নারী (free,believing women) বিয়ে করার মত আর্থিক সঙ্গতি রাখে না,তারা নিজেদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার ক্রীতদাসীদের
বিয়ে করবে।

দেখুন ভালো করে- স্বাধীন ও ঈমানদার (free,
believing women) কে বিবাহ করতে বলা হচ্ছে।এখন যদি স্বাধীন নারী বিবাহিত হয় ; তাহলে কি বলবেন কুরআন বিবাহিত নারীকে আবার বিবাহ করতে বলছে?কিন্তু এ কি আদৌ সম্ভব! স্বাধীন নারী বলতে এখানে নিঃসন্দেহে অবিবাহিত নারীকে বুঝিয়েছে।কুরআন তো বিবাহিত নারীদের পুনরায় বিবাহ করতে বলবে না।সুতরাং এখানে স্বাধীন নারী বলতে অবিবাহিত নারীকে বোঝাচ্ছে।

তারপরও যদি আপনি মনে করেন ;না এখানে স্বাধীন নারী বলতে বিবাহিত নারীই বুঝিয়েছে তাহলেও একটা যুক্তি হয়তো দেয়া সম্ভব।

হাদিস অনুসারে অবিবাহিত ব্যভিচারীর শাস্তি কিন্তু কেবল বেত্রাঘাত নয়, তার সাথে এক বছরের নির্বাসনও কিন্তু আছে।

সহীহ বুখারী ২৪৭৩- ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র
(রহঃ) যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবিবাহিত ব্যভিচারী সম্পর্কে একশ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের নির্বাসনের নির্দেশদিয়েছেন।

আবার বিবাহিতদের শাস্তি কিন্তু শুধু রজম নয় বরং রজমের পূর্বে ১০০ বেত্রাঘাতের বিধানও আছে।

“ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া তামীমী (রঃ) রেওয়ায়েত করেছেন, উবাদাহ ইবনে ছামেত বলেন, রাসূল পাক এরশাদ করেছেন, তোমরা আমার নিকট হতে গ্রহণ কর।তোমরা আমার নিকট হতে গ্রহণ কর। তোমরা আমার নিকট
হতে গ্রহণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক নারীদের জন্য একটি পথ বের করে দিয়েছেন। কোনো অবিবাহিত পুরুষ কোনো অবিবাহিতা নারীর
সাথে ব্যভিচার করলে একশ করে বেত্রাঘাত মার এবং এক বছরের জন্য দেশত্যাগী কর। আর
বিবাহিত পুরুষ কোনো বিবাহিতা নারীর
সাথে ব্যভিচার করলে তাঁদেরকে প্রথমে একশ
করে বেত্রাঘাত করে, তারপর প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা কর।”(সহি মুসলিম ৪২৬৯)

তবে বিজ্ঞ আলেমগণ বলেছেন, যদি ব্যভিচারী বিবাহিত হয় এক্ষেত্রে কেবল রজম করালেই হবে।কারণ অনেক হাদিস আছে সেখানে কেবল রজমের কথা আছে।তবে ইমাম আহমদ বলেছেন, বেত্রাঘাত এবং রজম দুইটায় করতে হবে।এতে আল্লহর কিতাব এবং নবীর সুন্নাত উভয়ের উপর আমল হবে।রজম করানো হচ্ছে নবীর সুন্নাত।অনেকটা দাঁড়ি রাখার মতো।তবে রজম করানো কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত কারণ হযরত উমর রাঃ কিন্তু রজম অস্বীকার কারীদের পথভ্রষ্ট বলেছেন।

যাই হোক মূল কথায় আসি।অবিবাহিতদের শাস্তির বিধান বেত্রাঘাত এবং নির্বাসন আর বিবাহিতদের বেত্রাঘাত এবং রজমের বিধান রয়েছে।

এবার ৪:২৫ আয়াতে স্বাধীন নারী যেহেতু অবিবাহিত সেহেতু দাসীর শাস্তি ১০০/২= ৫০ বেত্রাঘাত এবং ১/২=৬ মাসের নির্বাসন হওয়া উচিত ছিল।কিন্তু হাদিস থেকে দেখতে পারছি দাসীদের কেবল বেত্রাঘাত করা হয়েছে;কোনো নির্বাসন দেওয়া হয় নি।এমনকি ২য় কিংবা ৩য় ব্যভিচারেরও না।শুধু বেত্রাঘাত করা হয়েছে।আর ৪র্থ বেত্রাঘাতে তো বিক্রি করে দেবার কথা আছে।

দেখুনঃ সুনানে নাসাঈর মধ্যে আছে এবং সনদ সহীহ মুসলিমের সনদের উপরে রয়েছে যে,হযরত ইবাদ ইবনে তামীম (রঃ) তার চাচা বদরী সাহাবী হতে বর্ণিত যে, রসুলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যখন দাসী ব্যভিচার করে তখন তাকে চাবুক মার, আবার করে তো আবার মার,পুনরায় ব্যভিচার করলে পুনরায় চাবুক মার,অত;পর তাকে বিক্রয় করে ফেল, যদি তার মুল্য একটি রশির তুল্যও হয়।

দাসীর ক্ষেত্রে চাবুক মারা ছাড়া অন্য কোন বিধান নেই,তাকে নির্বাসনও দেওয়া যাবে না।বার বার ব্যভিচারের শাস্তি চাবুক মারা আর অবশেষে তো বিক্রি করার কথা বলা হচ্ছে।বিজ্ঞদের মতও হলো এটাই যে, দাসীর ক্ষেত্রে চাবুক মারা ছাড়া অন্য কোন হাদ্দ জারি হবে না।

এখন স্বাধীন নারী যদি বিবাহিত হয় এবং আমরা পূর্বে জেনেছি তাদের শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত এবং রজম।সুতরাং যেহেতু অবিবাহিত স্বাধীন নারীর ক্ষেত্রে ১বছরের নির্বাসনের শাস্তির অর্ধেক দাসীর উপর জারি করা হয় না।ঠিক তেমনি স্বাধীন নারী বিবাহিত হলে রজমের শাস্তি তার উপর বর্তাবে না।তার শাস্তি কেবল ১০০/২= ৫০ বেত্রাঘাত হবে কারণ রাসূল সাঃ দাসীর উপর বেত্রাঘাত ছাড়া অন্য শাস্তি প্রয়োগ করতে নিষেধ করেছেন।এমনকি তাদের ভৎর্সনা করতেও নিষেধ করেছেন।সুতরাং এখানে রজমের কথা আসবেই না।

(৩নং প্রশ্নঃ)
ﺍﻟﺰَّﺍﻧِﻲ ﻟَﺎ ﻳَﻨﻜِﺢُ ﺇﻟَّﺎ ﺯَﺍﻧِﻴَﺔً ﺃَﻭْ
ﻣُﺸْﺮِﻛَﺔً ﻭَﺍﻟﺰَّﺍﻧِﻴَﺔُ ﻟَﺎ ﻳَﻨﻜِﺤُﻬَﺎ
ﺇِﻟَّﺎ ﺯَﺍﻥٍ ﺃَﻭْ ﻣُﺸْﺮِﻙٌ ﻭَﺣُﺮِّﻡَ ﺫَﻟِﻚَ
ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ
ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে।(সূরা নূর ৩)

এখানে বলা হচ্ছে ব্যভিচারী পুরুষ ব্যভিচারিণী নারীকেই বিবাহ করে।কিন্তু তাকে যদি রজম করা হয় তাহলে সে কিভাবে বিয়ে করবে? লাশের সাথে কি বিবাহ হয় আর আল্লহ তাওবা করলে মাফ করার কথা বলেছেন,তাহলে লাশ কিভাবে তওবা করবে?

খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।এখানে আল্লহ খবর দিচ্ছেন যে,ব্যভিচারীর উপর একমাত্র ঐ ব্যক্তিই খুশি হতে পারে যে নিজে ব্যভিচারী অথবা শিরককারী।একমাত্র মুশরিক কিংবা ব্যভিচারীই একাজকে খারাপ মনে করে না।মুমিন কখনো এ কাজ পছন্দ করে না।আল্লহ মুমিনদের জন্য ব্যবিচারী কিংবা ব্যভিচারিণীকে হারাম করেছে।কারণ সহিহ হাদিসে আছে একজন মানুষ যখন ব্যভিচার করে তখন সে আর মুমিন কিংবা ঈমানদার থাকে না।তার ঈমান জামা খোলার মতো উপর দিয়ে বের হয়ে যায়।আর ইবনে আব্বাস বলেন,এ আয়াতে নিকাহ বলতে সঙ্গম বোঝানো হয়েছে।অর্থ্যাৎ একজন ব্যভিচারী বা মুশরিকই কেবল একজন ব্যভিচারী বা ব্যভিচারিণীর সাথে সঙ্গম করে বা মিলিত হয়।অনেকে বলেছে এখানে কি তাহলে মহান আল্লহ মুশরিককে বিবাহের অনুমতি দিচ্ছে? উত্তর না।আমি যদি উক্ত আয়াতের মতো বলি “মুশরিকরা মূর্তি পূজা করে থাকে” তার মানে কি আমি মুশরিকদের মূর্তি পূজা করার নির্দেশ দিচ্ছি?আর এখানে নিকাহ বলতে সঙ্গম বুঝিয়েছে আর হাদিস অনুসারে একজন ব্যভিচার করলে তওবা না করা পর্যন্ত তো সে ঈমানদারই না।যাই হোক মূল বক্তব্যে আসিঃ

উক্ত আয়াতটি ভালো করে দেখুনঃ “ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে”
এখানে বিয়ের পূর্বে নারী বা পুরুষকে ব্যভিচারী বা ব্যভিচারিণী বলে বিশেষণিত করা হচ্ছে।বিয়ে আগেই সে ব্যভিচারী এবং সে ব্যভিচারিণী বা মুশরিককে বিয়ে করে।আপনি বলছেন লাশ কিভাবে বিয়ে করবে? আপনি তো নিজেই স্বীকার করে নিচ্ছেন যে,আপনার লাশ অবিবাহিত।তাই তো তার বিয়ের প্রশ্ন আসছে।এখন প্রশ্ন আপনার লাশ যদি অবিবাহিতই হয় তাহলে এখানে তো রজমের প্রশ্নই আসছে না।আপনার লাশ অবিবাহিত হলে তো তার শাস্তি মৃত্যুদন্ড না।তার শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত এবং তারপর সে বিয়ে করতে পারবে।রজম তো বিবাহিতদের জন্য; আপনার যদি বিবাহিতই হয় তাহলে বিয়ে কীভাবে করবে এ প্রশ্ন আসছে কেন?

আবার অনেকে বলে এখানে পরিতক্তা নারীর কথা বলা হতে পারে যাদের স্বামী ব্যভিচার প্রমাণ করতে পারে নি তাই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে।আর পরিতক্তা নারীর তো বিবাহ হয়।

এ কথার উত্তর খুব সহজ।উপরে যদি পরিতক্তা নারীর কথা বোঝায় তাহলে তো পরিতক্তা পুরুষের কনসেপ্টও আসে।পরিতক্তা পুরুষ বলে কিছু আছে কি? আর আপনি বললেন স্বামী ব্যভিচার প্রমাণ করতে পারে নি বলে তালাক দিয়েছে।আর এমন নারীর তো বিয়ে হয়।জ্বি তা হয়।কিন্তু জনাব আপনি তো স্বীকার করেই নিলেন যে স্বামী ব্যভিচার প্রমাণ করতে পারে নি।আর অপ্রমাণিত ব্যভিচারের তো কোনো শাস্তিই নেই।রজমের কথা আসে কিভাবে?

আর এখানে সেই সব ব্যভিচারীদের কথা হয়তো বোঝানো হয়েছে,যাদের ব্যভিচার প্রমাণিত নয় কিংবা গোপন রয়েছে।

এবার প্রশ্ন হলো রজম করালে লাশ তওবা করবে কিভাবে?

এ প্রশ্নটা অযৌক্তিক।বিষয় যেন এমন যে ব্যভিচার করার সাথে সাথে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়।ব্যভিচার প্রমাণ করতে হবে,সাক্ষী যোগার করতে হবে।ব্যভিচারী অনেক সময় পাবে তওবা করার।আর তওবা করলে যে শাস্তি হবে না এটা ভুল।আপনি তওবা করেছেন এবং যদি ব্যভিচারের কথা গোপন রাখতে পারেন,তাহলে আপনার কোনো শাস্তি নেই।কিন্তু প্রকাশিত হলে নিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে।

দেখুনঃ হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন- তোমরা ব্যভিচার থেকে দূরে থাকো যা আল্লহ তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।এরপরও যে শয়তানের পড়ে তা করে ফেলে সে যেন তা লুকিয়ে রাখে। যখন আল্লহ তা গোপনই রেখেছেন।তবে সে যেন এ জন্য আল্লহ তালার নিকট তাওবা করে নেয়। কারণ যে ব্যক্তি তা আমাদের নিকট প্রকাশ করে তার উপর আমরা অবশ্যই আল্লহ তালার বিধান প্রয়োগ করবো। (হাকিম ৪/২৭২)

আর তওবা করার পরও নবী শাস্তি দিয়েছেন।

দেখুনঃ(সহিহ বুখারী৪২৮৩) আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নূমায়র (রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,গামেদী এক মহিলা আগমন করলো এবং বলল, হে আল্লার রাসুল! আমি ব্যভিচার করেছি।
সুতরাং আপনি আমাকে পবিত্র করুন। তখন
তিনি তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন।-পরবর্তী দিন আবার ঐ মহিলা আগমন করলো এবং বলল,
হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!আপনি কেন আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।আপনি কি আমাকে ঐভাবে ফিরিয়ে দিতে চান,যেমনভাবে আপনি ফিরিয়ে দিয়ে ছিলেন মায়েযকে। আল্লাহর শপথ করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি গর্ভবতী। তখন তিনি বললেনঃতুমি যদি ফিরে যেতে নাচাও,তবে আপাততঃ এখনকার মত চলে যাও এবং প্রসবকাল সময় পর্যন্ত অপেক্ষা কর।রাবী বলেনঃ এরপর যখন সে সন্তান প্রসব করল- তখন
তিনি সন্তানকে এক টূকরা কাপড়ের মধ্যে নিয়ে তাঁর কাছে আগমন করলেন এবং বললেনঃ এই
সন্তান আমি প্রসব করেছি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যাও
তাকে (সন্তানকে) দুধ পান করাও গিয়ে। দুধপান করানোর সময় উত্তীর্ণ হলে পরে এসো।এরপর যখন তার দুধপান করানোর সময় শেষ হল তখন ঐ মহিলা শিশু সন্তানটিকে নিয়ে তার কাছে আগমন করলো এমন অবস্থায় যে, শিশুটির
হাতে এক টূকরা রুটি ছিল।এরপর বললো, হে আল্লাহর নাবী! এইতো সেই শিশু-যাকে আমি দুধপান করানোর কাজ শেষ করেছি। সে এখন
খাদ্য খায়। তখন শিশু সন্তানটিকে তিনি কোন
একজন মুসলমানকে প্রদান করলেন। এরপর তার
প্রতি ( ব্যভিচারের শাস্তি) প্রদানের নির্দেশ দিলেন।মহিলার বক্ষ পর্যন্ত গর্ত খনন করানো হল এরপর জনগণকে (তার প্রতি পাথর নিক্ষেপের) নির্দেশ দিলেন। তারা তখন তাকে পাথর মারতে শুরু করল।খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) একটি- পাথর নিয়ে অগ্রসর হলেন এবং মহিলার মাথায়
নিক্ষেপ করলেন, তাতে রক্ত ছিটকে পড়লো খালিদ (রাঃ) এর মুখমণ্ডলে। তখন তিনি মহিলাকে গালি দিলেন।নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম গালি শুনতে পেলেন।
তিনি বললেনঁ, সাবধান!হে খালিদ! সেই মহান
আল্লাহর শপথ, যার হস্তে আমার জীবন, জেনে রেখো!নিশ্চয়ই সে এমনতাওবা করেছে, যদি কোন ‘হক্কুল ইইবাদ” বিনষ্টকারী ব্যক্তিও এমন
তাওবা করতো- তবে তারও ক্ষমা হয়ে যেতো। এরপর তার জানাযার সালাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। তিনি তার জানাযায় সালাত আদায়
করলেন। এরপর তাকে দাফন করা হলো।

দেখুন মহিলা কিন্তু তওবা করেছিল তবুও তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল কারণ তার পাপ প্রকাশিত হয়েছিল।সে স্বীকার করেছিল।তাই যদি পাপ গোপণ রাখতে পারেন,তাহলে কোনো শাস্তি নেই।

(প্রশ্ন নং ৪) আল্লহ সূরা আহযাবে নবীপত্নীদের অশ্লীল কর্মের জন্য দ্বিগুণ শাস্তির কথা বলেছেন।যদি নবী পত্নিরা ব্যভিচার করে তাহলে রজমের দ্বিগুণ শাস্তি কিভাবে হবে?

ﻳَﺎ ﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻣَﻦ ﻳَﺄْﺕِ
ﻣِﻨﻜُﻦَّ ﺑِﻔَﺎﺣِﺸَﺔٍ ﻣُّﺒَﻴِّﻨَﺔٍ
ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻬَﺎ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﺿِﻌْﻔَﻴْﻦِ
ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺫَﻟِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳَﺴِﻴﺮًﺍ
হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য
অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ
শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।(সূরা আহযাব ৩০)

রজম বাতিলের পক্ষে এটা আমার সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত আয়াত বলে মনে হয়।তবে এ আয়াত দ্বারাও রজম বাতিল হয় না।

এখানে প্রকাশ্যে অশ্লীল কর্মের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু ব্যভিচার কিন্তু প্রকাশ্য পাপ নয়।এটা গোপনে করা হয়।তবুও যুক্তির খাতিরে মেনে নিলাম।কিন্তু এখানে দ্বিগুণ শাস্তির কথা বলা হচ্ছে।এখন ব্যভিচারের শাস্তি যদি শুধু ১০০ বেত্রাঘাত হয় তাহলে কি নবী পত্নিদের শাস্তি ২০০ বেত্রাঘাত? কিন্তু এটা তো সূরা নূরের ২ আয়াতের বরখেলাফ।কারণ উক্ত আয়াতে ব্যভিচারীর শাস্তি ১০০ বলা হয়েছে।তাহলে এ দ্বিগুণ শাস্তি কখন?

জবাব হচ্ছে এ দ্বিগুণ শাস্তি ইহকালে নয় বরং পরকালের।এ আয়াতের পূর্বের আয়াতগুলো দেখুনঃ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﻗُﻞ ﻟِّﺄَﺯْﻭَﺍﺟِﻚَ
ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻦَّ ﺗُﺮِﺩْﻥَ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ
ﻭَﺯِﻳﻨَﺘَﻬَﺎ ﻓَﺘَﻌَﺎﻟَﻴْﻦَ ﺃُﻣَﺘِّﻌْﻜُﻦَّ
ﻭَﺃُﺳَﺮِّﺣْﻜُﻦَّ ﺳَﺮَﺍﺣًﺎ ﺟَﻤِﻴﻠًﺎ
হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন,তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।(২৮)
ﻭَﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻦَّ ﺗُﺮِﺩْﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪَ
ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﻭَﺍﻟﺪَّﺍﺭَ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓَ ﻓَﺈِﻥَّ
ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺃَﻋَﺪَّ ﻟِﻠْﻤُﺤْﺴِﻨَﺎﺕِ ﻣِﻨﻜُﻦَّ
ﺃَﺟْﺮًﺍ ﻋَﻈِﻴﻤًﺎ
পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও
পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার
প্রস্তুত করে রেখেছেন।(২৯)

দেখুন পরকালে তাদের মহাপুষ্কার দেওয়ার কথা বলে অশ্লীল কর্মের জন্য দ্বিগুণ শাস্তির কথা বলছে।সুতরাং এ শাস্তি ইহকালের নয় বরং পরকালের। আরো প্রমাণ দেওয়া সম্ভব যে এ শাস্তি ইহকালের নয় বরং পরকালের।

ﻭَﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻃَﻌْﻨَﺎ ﺳَﺎﺩَﺗَﻨَﺎ
ﻭَﻛُﺒَﺮَﺍﺀﻧَﺎ ﻓَﺄَﺿَﻠُّﻮﻧَﺎ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻠَﺎ
তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা,
আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম,
অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল।
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﺗِﻬِﻢْ ﺿِﻌْﻔَﻴْﻦِ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏِ ﻭَﺍﻟْﻌَﻨْﻬُﻢْ ﻟَﻌْﻨًﺎ ﻛَﺒِﻴﺮًﺍ
হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ
শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।(সূরা আহযাব ৬৭-৬৮)

দেখুন এখানে পরকালের দ্বিগুণ শাস্তির কথা স্পষ্ট।তারপরে পরকালে ব্যভিচারের শাস্তিই দ্বিগুণ দেওয়া হবে একথা আল্লহ কুরআনে বলেছেন।
দেখুনঃ সূরা ফুরকান (৬৭-৬৮) ” এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যা হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻳَﺨْﻠُﺪْ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।

ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ
ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
সুতরাং এখানে স্পষ্ট এ শাস্তি ইহকালের নয় বরং পরকালের।

(প্রশ্ন নং ৫) রজমের আয়াত কুরআনে নেই।ইবনে মাজহায় হাদিস আছে যে, ছাগল রজমের আয়াত খেয়ে ফেলেছে? এ থেকে বোঝা যায় রজমের বিধান আর কার্যকর নেই।

রজমের আয়াত কুরআনে ছিল।কিন্তু পরে তার তিলাওয়াত রহিত হয় তবে তার বিধান আজও বর্তমান আছে।ইমাম নববী এবং হাফেজ হাজর আসকালী সকলেই বলেছেন, এ আয়াতের তিলাওয়াত রহিত হয়েছে তবে এর বিধান আজও বর্তমান।নিচের হাদিসগুলো দ্বারা এ বিষয়গুলো আরো স্পষ্ট হবে।

(বুখারী-৬৮২৯,মুসলিম-১৬৯১,আবু দাউদ-৪৪১৮) আছে।
“হযরত উমর (রাঃ) তার এক দীর্ঘ খুতবায় বলেন,নিশ্চয় আল্লহ তা’আলা মুহাম্মদ (সাঃ) কে সত্য ধর্ম দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং তার উপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন।আল্লহ তা’আলা তার উপর যা অবতীর্ণ করেন তার মধ্যে রজমের আয়াতও ছিল।আমরা তা পড়েছি,মুখস্ত করেছি ও বুঝেছি।অতঃপর রাসূল (সাঃ) রজম করেছেন এবং আমরাও তার ইন্তেকালের পর রজম করেছি।আশঙ্কা হয় বহু কাল পর কেউ বলবেঃ আমরা কোরআন মাজীদে রজম পাইনি।অতঃপর তারা আল্লহ তা’আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি ফরয কাজ ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।হযরত উমর (রাঃ) যে আয়াতের ইঙ্গিত করেছেন তা হচ্ছে,”বয়স্ক (বিবাহিত) পুরুষ ও মহিলা যখন ব্যভিচার করে তখন তোমরা তাদেরকে সন্দেহাতীতভাবে পাথর মেরে হত্যা করবে।এটিই হচ্ছে আল্লহ তালার পক্ষ থেকে তাদের জন্য শাস্তিস্বরুপ এবং আল্লহ তালা পরাক্রমশালী ও সুকৌশলী।
উক্ত আয়াতের তিলাওয়াত রহিত হয়েছে।তবে উহার বিধান চালু রয়েছে।

হযরত উমর (রাঃ) এর হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে,আয়াতটি মানসুক বা রহিত হয়েছে।এখন এ রহিত আয়াত যদি ছাগলে খায়,তাহলে কুরআনের বিশুদ্ধতার কি পরিবর্তন আসে বলুন।রহিত আয়াত ছাগলে খেল কি গরুতে খেল এতে কি আসে যায় বলুন।মূল কুরআনের তো কোনো ক্ষতি হয় নি।এটাই কুরআনের বিশুদ্ধতার প্রমান।আর যদি ছাগলে নাও খেত,তাহলে কুরআন সংকলনের সময় হয়তো এগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হতো।

এ থেকে আরো প্রমাণ পাওয়া যায় যে, রজমের নির্দেশ কখনো বাতিল হয় নি।কারণ উমর রাঃ নিজে বলেছেন যে, “রাসূল (সাঃ) রজম করেছেন এবং আমরাও তার ইন্তেকালের পর রজম করেছি।” এ থেকে স্পষ্ট যে, রজম কখনো বাতিল হয় নি।আর উনি বলেছেন, রজম অস্বীকারকারীরা পথভ্রষ্ট।এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, রজম করানো একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।

আরো হাদিস দেখুনঃ
১) “হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রাঃ হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত উমর রাঃ কে বলতে শুনেছেনঃ ” লোকেরা বলে যে,তারা রজম করার কথা কুরআনে পাই না।কুরআনে কেবল চাবুক মারার হুকুম রয়েছে।জেনে রেখো যে, স্বয়ং রাসূল সাঃ রজম করেছেন,তারপর আমরাও করেছি।
” কুরআন যা নেই, উমর রাঃ তা লিখিয়ে নিয়েছেন” এ কথার ভয় যদি আমি না করতাম তবে রজমের আয়াত আমি লিখিয়ে নিতাম যেভাবে ওটা অবতীর্ণ হয়েছিল।(মুসনাদে আহমদ)

২) হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়ার রাঃ হতে বর্ণিত যে, হযরত উমর রাঃ বলেছেন, ” তোমরা রজমের হুকুম অস্বীকার করার ধ্বংস থেকে বেঁচে থাকো।(ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন,ইমাম তিরমিযী রাঃ এটা আনয়ন করেছেন এবং বিশুদ্ধ বলেছেন)

৩) কাসীর ইবনে সালত রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমরা মারওয়ানের নিকট উপবিস্ট ছিলাম।সেখানে হযরত যায়েদ ইবনে সাবিতও ছিলেন।তিনি বলেনঃ “আমরা কুরআনে পড়তাম- বিবাহিত পুরুষ বা নারী ব্যভিচার করলে তোমরা অবশ্যই রজম করবে।” মারওয়ান তখন জিজ্ঞেস করেন,” আপনি কুরআন কারীমে এটা লিখেন না যে? উত্তরে তিনি বলেনঃ আমাদের উমর রাঃ বলেন, আমি তোমাদের স্বান্তনা দিচ্ছি যে, একটি লোক একদা নবী সাঃ এর কাছে আগমন করে।সে তার সামনে এরুপ বর্ণনা দেয়।আর সে রজমের বর্ণনা দেয়।কে একজন বলে, হে রাসূল সাঃ আপনি রজমের আয়াত লিখিয়ে নিন।রাসূল সাঃ বলেন আমি তো এটা লিখিয়ে নিতে পারি না।(আহমদ ও নাসাঈ)

বিস্তারিতঃ http://www.islamic-life.com/other-refutations/quran/article-missing-quranic-verse-rajam-stoning

এসব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রজমের আয়াত পূর্বে লিখিত ছিল।তারপর তিলাওয়াত রহিত হয় তবে হুকুম বাকি আছে।

(৬ নং প্রশ্নঃ) রজমের আয়াত যদি রহিত হয় তাহলে তার স্বরুপ কিংবা ঐ রকম কোনো আয়াত কুরআনে থাকা উচিত।কারণ আল্লহ বলেন, “আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে,আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান?” [ সূরা বাকারা-১০৬]
যেমন, প্রথমে ব্যভিচারিণীদের গৃহ বন্দি করতে বলা হয় (৪:১৫) পরে বেত্রাঘাতের নির্দেশ আসে(নূর ২)।কিন্তু রজমের পর্যায়ের কোনো আয়াত নেই?

এটা অনেক ভালো যুক্তি।তবে এখানে বুঝতে হবে দাবিটা কি? দাবি হচ্ছে কেবল তিলাওয়াত রহিতকরণের কিন্তু এর বিধান তো বর্তমান।আল্লহ কোনো বিধান বাতিল করলে তার সমপর্যায়ের বিধান আনেন।কিন্তু হাদিস থেকে পরিষ্কার রজমের বিধান তো বাতিলই হয় নি।তাহলে তো নতুন বিধান আনার কোনো প্রয়োজন নেই।যেমন- আগে ব্যভিচারিণীদের গৃহ বন্দি করতে বলা হয় (৪:১৫) পরে বেত্রাঘাতের নির্দেশ আসে(নূর ২)।আর আল্লহ তো কেবল আয়াত রহিত করেন না,বরং বিস্মৃতও করেন।এখানেও তাই হয়েছে।সূরা আলা (৬-৭)

ﺳَﻨُﻘْﺮِﺅُﻙَ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻨﺴَﻰ
আমি আপনাকে পাঠ
করাতে থাকব, ফলে আপনি বিস্মৃত
হবেন না
ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺷَﺎﺀ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻧَّﻪُ ﻳَﻌْﻠَﻢُ
ﺍﻟْﺠَﻬْﺮَ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺨْﻔَﻰ
আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত।
নিশ্চয় তিনি জানেন প্রকাশ্য ও
গোপন বিষয়।

এ আয়াতে তিলাওয়াত রহিত হয় কথাটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।

আর কুরআনেও রজমের কাছাকাছি একটি আয়াত আছে।

ﻭَﺍﻟﻠَّﺬَﺍﻥَ ﻳَﺄْﺗِﻴَﺎﻧِﻬَﺎ ﻣِﻨﻜُﻢْ
ﻓَﺂﺫُﻭﻫُﻤَﺎ ﻓَﺈِﻥ ﺗَﺎﺑَﺎ ﻭَﺃَﺻْﻠَﺤَﺎ
ﻓَﺄَﻋْﺮِﺿُﻮﺍْ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ
ﺗَﻮَّﺍﺑًﺎ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
তোমাদের মধ্য থেকে যে দু’জন সেই
কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের
সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।

“If two men among you are guilty
of lewdness, punish them both. If
they repent and amend, Leave
them alone; for Allah is Oft-
returning, Most Merciful.”
— Qur’an, Sura 4 (Al-Nisa), ayat16

এ আয়াতে সমকামীদের ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়।আর উক্ত আয়াতে তাদের শাস্তির কথা বলা হচ্ছে।তবে এ শাস্তির কথা কুরআনে নেই,হাদিসে আছে।আর সেটা হলো রজম।সমকামীদের ব্যাপারে কিন্তু বিবাহিত- অবিবাহিত হওয়ার ব্যাপার নেই।সমকাম করে ধরা পড়লেই রজম।

দেখুনঃ Narrated Abdullah ibn Abbas: The
Prophet said: If you find anyone
doing as Lot’s people did, kill
the one who does it, and the one
to whom it is done.
— Sunan Abu Dawood, 38:4447

Narrated Abdullah ibn Abbas: If a
man who is not married is seized
committing sodomy , he will be
stoned to death.
— Sunan Abu Dawood, 38:4448

তাহলে বলুন কিভাবে রজম কুরআন বিরোধী হয়!
আল্লহর রাসূল নির্দেশ দিয়েছে তাই এটা মেনে নেওয়া আমাদের কর্তব্য।কারণ আল্লহ বলেন- ‘রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর,
আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ
করে তা থেকে বিরত হও
এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ
শাস্তি প্রদানে কঠোর।’ {সূরা আল-হাশর,
আয়াত : ০৭}

তবে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি পাকিস্তানের এ ঘটনার।পাকিস্তানে এ কেমন ফতোয়া? ধর্ষণিতাকে কেন ৪ জন সাক্ষী আনতে হবে? আর ধর্ষিতা সাক্ষী আনতে পারে না কিন্তু ব্যভিচারের উপকরণ তার কাছে পাওয়ার কারণে তাদের শাস্তি পেতে হয়।

The number of incidents of violence
against women increased by 13 per
cent in 2009 , says a report by the Aurat
Foundation set to be released on
Wednesday. The report states that
8,548 incidents of violence against
women were reported in 2009
compared to 7,571 incidents reported
in 2008. Of these, 5,722 were reported
to have occurred in Punjab, followed by
1,762 in Sindh, 655 in Khyber-
Pakhtunkhwa and 237 in Balochistan.
Similarly, 172 cases of violence against
women were reported in Islamabad, the
report said.
2009 In Pakistan, it is reported that three out of four women in prison under its Hudud laws [these are the laws of what it forbidden and permitted by Allah
himself], are rape victims . Because
rape is equated with zina [unlawful
sexual intercourse] under Hudud law,
rape victims are required to produce
four pious male witnesses. It is of
course nearly impossible for the rape
victims to produce the four male
witnesses required to prove their
allegation. Therefore their police report
of rape was taken as a confession of
illicit sex on their part and they were
duly found guilty.

পাকিস্তানে কি নিচের হাদিসগুলো পৌছায় নি?

(মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-২৫৯৫) নাফি’ (রা) হতে বর্ণিত আছে যে, গনীমতের এক পঞ্চমাংশের মালের মধ্যে যে সকল দাস-দাসী ছিল তাদের মধ্যে এক দাস এক দাসীর
সহিত বলপুর্বক ব্যভিচার করেছিল ।উমর (রা) তাকে বেত্রাঘাত করে তাড়াইয়া দিলেন (কিন্ত)
তিনি দাসীকে প্রহার করলেন না ।কারণ তার উপর বল প্রয়োগ করা হয়েছিল।

সাহাবী ওয়ায়েল ইবনে হুাজর (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর যুগে জনৈকা মহিলা মসজিদে ছালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে বের হন।
একজন লোক তাকে একা পেয়ে কাপড়ে ঢেকে নেয় এবং তাকে ধর্ষণ করে। মহিলা চিৎকার শুরু করলে লোকটি চলে যায়। সেখান
দিয়ে মুহাজিরদের একদল লোক যাচ্ছিলেন। মহিলাটি তাদেরকে বললেন যে,
ঐ লোক আমার সাথে এরূপ আচরণ করেছে। তখন লোকেরা তাকে ধরে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে নিয়ে আসলে মহিলাটি তার ধর্ষককে চিনতে পারে। এরপর রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ মহিলাকে বললেন, তুমি চলে যাও। আল্লাহ
তোমাকে ক্ষমা করুন। অতঃপর রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ ধর্ষণকারী পুরুষকে রজম করার আদেশ
দিলেন (আবুদাঊদ হা/৪৩৭৯; তিরমিযী হা/১৪৫৪, মিশকাত হা/৩৫৭২,
হাদীছটি হাসান, ‘হুদূদ’ অধ্যায়)।